একমাত্র ছেলে তার মাকে প্রথম বারের মতো বৃদ্ধাশ্রমে রেখে ফিরছিল।

একমাত্র ছেলে তার মাকে  প্রথম বারের মতো বৃদ্ধাশ্রমে রেখে ফিরছিল। রাস্তার মাঝে ফোন এলো।


তার বউ ফোন করে বলছে:- তুমি আর একবার বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে যাও একটা কথা বলতে ভুল হয়ে গেছে। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে তুমি তোমার মা কে ভালোভাবে বুঝিয়ে এসো,


পূজো-পার্বন এমনকি তোমার জন্মদিনেও তোমার মা যেন কষ্ট করে ওই বৃদ্ধাশ্রমে থেকে যায়। আমাদের বাড়িতে যেন না আসে। বাধ্য হয়ে বউ এর কথা মতো আবার ওই বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে গেল।



সেখানে গিয়ে সে একটা অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে পেল। তার বৃদ্ধ মা ওই বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ মালিকের সাথে খুব হেসে হেসে কথা বলছে। এটা দেখে ছেলের মনে সন্দেহ হলো।


সে মনে মনে ভাবলো মা কি তাহলে আগে থেকেই এই বৃদ্ধাশ্রমের মালিককে চিনতো? কে জানে হয়তো বা! তারপর অপেক্ষা করতে লাগলো।


কিছুক্ষন পর মা ওনার নির্দিষ্ট কামরায় চলে যাবার পর ছেলে ওই বৃদ্ধাশ্রমের মালিকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, স্যার একটা কথা জিজ্ঞাসা করছি কিছু মনে করবেন না!


বলছি যে একটু আগে আপনি মায়ের সাথে যেভাবে কথা বলছিলেন তাতে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনারা পূর্ব পরিচিত, সত্যিই কি তাই?অনাথ আশ্রমের মালিক হেঁসে বললেন হ্যাঁ।


ওনাকে আমি প্রায় ৪০ বছর আগে থেকে ভালো করেই চিনি এবং জানি। আমি জানি না কোন পরিস্থিতিতে উনি আজ এই বৃদ্ধাশ্রমে এসেছেন।


তবে মনের দিক থেকে আপনার মা একজন বড় মনের মানুষ। ছেলে বললো আমি তো সেটাই জানতে চাইছি। মা কে কিভাবে চিনলেন?


বৃদ্ধ মালিক বললেন,,,,


৪০ বছর আগে আমার আন্ডারে থাকা একটা অনাথ আশ্রম থেকে উনি একটি অনাথ শিশুকে দত্তক নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন, এবং আমার অনুমান যদি ভুল না হয় তাহলে ৪০ বছর আগে দত্তক নেওয়া সেই অনাথ শিশুটি এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।


এই কথা শোনার পর ছেলেটির আর বুঝতে বাকি রইলো না। ৪০ বছর আগের সেই অনাথ শিশুটিই যে উনি।


ছেলেটির চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরতে লাগলো। ছেলেটি হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। আর দেরি না করে দৌড়ে তার মায়ের  কক্ষে গিয়ে ওনার পা ধরে কান্না করতে লাগলো।


বৃদ্ধ মার পা ধরে বলতে লাগলো আমাকে মাফ করে দাও। আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।


২ দিনের ভালোবাসার জন্য ৪০ বছরের ভালোবাসাকে আমি ভুলে গেছি। ছেলের এই করুন দৃশ্য দেখে মাও কেঁদে ফেললেন।


তিনি ছেলেকে পা থেকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলেন ধুর বোকা ছেলে, এর জন্য কান্না করতে আছে। আমি তো তোকে মাফ করেই দিয়েছি।


এবার ছেলেটি কান্না থামিয়ে মাকে সেই বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরে গেল।


পৃথিবীর সকল বাবার মা এর প্রতি রইলো আমার প্রনাম,, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url